ওয়াশিংটননিউজ, ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০২৩ : দেশের প্রকৃতি ও পরিবেশে সর্বনাশ ঘটছে। আমাদের দেশি মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বিপন্ন হচ্ছে কত বন্য প্রাণী, হারিয়ে যাচ্ছে শতবর্ষী ও দুর্লভ অনেক গাছ। এ নিয়ে শঙ্কা ও উদ্বেগের শেষ নেই। এরই মধ্যে নতুন দুঃসংবাদ হচ্ছে, দেশের অনেক উদ্ভিদও এখন বিলুপ্তির দিকে। ইতিমধ্যে সাত প্রজাতির উদ্ভিদ পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। জীববৈচিত্র্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ উদ্ভিদ নিয়ে দেশের উদ্ভিদবিজ্ঞানীদের করা একটি জরিপে বিষয়টি উঠে এসেছে। সেখান থেকে বোঝা যাচ্ছে, আমাদের উদ্ভিদগুলো ভালো নেই। সেগুলোকে রক্ষা করার জন্য নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জরুরি।
বাংলাদেশের উদ্ভিদ প্রজাতিগুলোর ওপর জরিপ চালিয়ে একটি লাল তালিকা বা রেড লিস্ট করার উদ্যোগ নেয় প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থা আইইউসিএন। সে লাল তালিকা প্রণয়নে নেতৃত্ব দিয়েছেন দেশের চারজন জ্যেষ্ঠ উদ্ভিদবিজ্ঞানী। এর আগে দেশে একাধিকবার প্রাণীদের লাল তালিকা তৈরি হলেও উদ্ভিদের তালিকা এ প্রথম করা হলো। জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৩৯ শতাংশ উদ্ভিদই কোনো না কোনোভাবে বিপদগ্রস্ত আছে বা বিপদাপন্ন। পুরোপুরি বিলুপ্তি হয়ে গেছে মানে গত ১০০ বছরের মধ্যে দেশের আর কোথাও দেখা যায়নি এমন উদ্ভিদ হচ্ছে সাতটি—ফিতাচাঁপা, কুড়াজিরি, ভানু দেয়পাত, গোলা অঞ্জন, সাত সারিলা, থার্মা জাম ও মাইট্রাসিস। মহাবিপন্ন আছে বাঁশপাতা, বনখেজুর, বালবোরক্স, লম্বা ট্রায়াস অর্কিড ও বলগাছ। অল্প কিছু জায়গায় উদ্ভিদের এ প্রজাতিগুলো আছে। সংরক্ষণের জন্য জরুরি পদক্ষেপ না নিলে সেগুলোও দ্রুত বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
এর আগে মহাবিপন্ন প্রাণী ঘোষিত বাঘ, শকুন বা ঘড়িয়াল নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ায় প্রাণীগুলোর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সেগুলো বিলুপ্ত হওয়ার ঝুঁকি কমেছে। আমরা আশা করব মহাবিপন্ন, বিপন্ন ও সংকটাপন্ন উদ্ভিদগুলোর রক্ষায় সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে তেমন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর জন্য সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ।