বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন

উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের পাল্টাপাল্টি বিবৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪

ওয়াশিংটননিউজ ,ঢাকা,শুক্রবার, ২৩ আগস্ট ২০২৪ : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য নিয়োগের আগে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী সমর্থক শিক্ষকদের পাল্টাপাল্টি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ও রাতে দুই পক্ষ এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়।

প্রথম বিজ্ঞপ্তিটি দেয় ক্যাম্পাসে জামায়াতে ইসলামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন হিসেবে পরিচিত সাদা দল। বিজ্ঞপ্তিতে সাদা দলের পরিচিতি হিসেবে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী শিক্ষক সমাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্য পদে দলটির আহ্বায়ক অধ্যাপক শামিম উদ্দিন খানকে সুপারিশ করার কথা উল্লেখ করা হয়। তবে এই সুপারিশ কোথায় করা হয়েছে, সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কোনো চিঠি দেওয়া হয়েছে কি না অথবা সরকার থেকে এই ধরনের সুপারিশ চাওয়া হয়েছে কি না, এর কোনো ব্যাখ্যা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়নি।

পরে পাল্টা বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন জাতীয়বাদী শিক্ষক ফোরাম। তাতে বলা হয়েছে, গত এক দশকের বেশি সময় ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয়তাবাদী আদর্শের শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত সাদা দল বলে কোনো মোর্চা সক্রিয় নেই। বর্তমানে সাদা দল বলতে জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের দলকে বোঝায়। মতাদর্শগত কারণে জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের থেকে আলাদা হয়ে জাতীয়তাবাদী আদর্শের শিক্ষকেরা ‘জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’ ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয় রয়েছে। তাই তথাকথিত সাদা দল–এর বর্তমান কার্যক্রমের সঙ্গে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী শিক্ষক সমাজের কোনো সম্পর্ক নেই।

জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক শামিম উদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করার জন্য তাঁরা ১০-১৫ জন দল থেকে বের হয়েছেন। আমাদের এখানে অর্ধেক লোক বিএনপির। তাঁরা ১০-১৫ জন চলে গেলে দল শেষ এটা বলা যাবে না।’

তাঁর এই বক্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এস এম নছরুল কাদির প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতীয়বাদে বিশ্বাসী যদি কেউ থাকে তাহলে জামায়াতের নেতৃত্ব কেন এটি (সাদা দল) পরিচালিত হচ্ছে? ওনারা বেগম জিয়া, কিংবা বিএনপির জন্য কোনো বিবৃতি দেওয়া বা কর্মসূচি গত এক দশকে করেননি।’

এ কারণেই তাঁরা সাদা দল থেকে বের হয়ে যান জানিয়ে এস এম নছরুল কাদির বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম প্রগতিশীলতায় বিশ্বাসী। আমাদের এটা ক্যাডারভিত্তিক সংগঠন না। আমাদের দলের সংকট নেই। কিছুদিন আগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই সংকট থেকেই তাঁরা জাতীয়তাবাদের নাম ব্যবহার করছেন।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী। এই অধ্যাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের কথা উল্লেখ রয়েছে সিনেটের মাধ্যমে। সিনেট কর্তৃক মনোনীত তিনজনের প্যানেল থেকে নির্ধারিত শর্তে আচার্য (রাষ্ট্রপতি) একজনকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেবেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নিয়মটি অবহেলিত। সর্বেশষ এই প্রক্রিয়ায় উপাচার্য নিয়োগ হয়েছিল প্রায় ৩০ বছর আগে। আচার্য যাঁকে আস্থাভাজন মনে করেন, তাঁকেই নিয়োগ দেন।

সাদা দল থেকে উপাচার্য নিয়োগের সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক শামিম উদ্দিন খান বলেন, ‘আমাদের দল থেকে উপাচার্য পদে চেষ্টা করার জন্য একজনকে বলা হয়েছে। দলীয়ভাবে চিন্তা করেছে আমাদের প্রার্থী একজনই হওয়া উচিত। একজনই চেষ্টা করবেন।’

চেষ্টা কীভাবে করবেন, সাদা দল থেকে সরকারকে কোনো চিঠি দেওয়া হবে কি না, জানতে চাইলে অধ্যাপক শামিম উদ্দিন খান বলেন, ‘এই ধরনের কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে না। গণমাধ্যমের মাধ্যমে সরকারকে এটি জানানো হবে। আলাদাভাবে কোনো চেষ্টা না। সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে, সেটি মেনে নেবেন

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ