মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪১ অপরাহ্ন
শিরোনাম

ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় যেসব খাবার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশের সময় : সোমবার, ১৫ মে, ২০২৩

ওয়াশিংটননিউজ,  ঢাকা, সোমবার, ১৫ মে ২০২৩ : কিছু খাবার ফিটনেস ও হার্টের জন্য ভালো নয়, এটা প্রায় সবারই জানা। কিন্তু একাধিক গবেষণার তথ্য বলছে, জাঙ্ক ফুড ও অন্যান্য কিছু খাবার ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

এ প্রতিবেদনে কিছু খাবার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো যা এড়িয়ে চললে, বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনার ক্যানসারের ঝুঁকি কমবে।

* বারবিকিউ: গ্রিল প্রেমিকেরা, সাবধান। অত্যধিক মাংস (বিশেষ করে, অত্যধিক রান্নাকৃত মাংস) খাওয়ার সঙ্গে ক্যানসারের বর্ধিত ঝুঁকির সম্পর্ক রয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রিলের ওপর মাংস রান্না করলে পিএএইচ নামক কার্সিনোজেনিক কম্পাউন্ড উৎপন্ন হতে পারে। ফ্লেইম-ব্রয়েলড (সরাসরি তাপ প্রয়োগে রান্না) বার্গার বা স্টিকের পোড়া দাগ হচ্ছে কেমিক্যালের লক্ষণ যা খেতে যতটা সুস্বাদু, স্বাস্থ্যের জন্য তার চেয়েও বেশি খারাপ। তাই যদি আপনি নিয়মিত উচ্চ তাপমাত্রায় রান্নাকৃত মাংস খান, তাহলে বিকল্প পদ্ধতির খাবার গ্রহণের কথা বিবেচনা করুন।

* গাঁজানো খাবার: উপকারী ব্যাকটেরিয়া সরবরাহ ও পরিপাকতন্ত্রের উপকারিতার কারণে গাঁজানো খাবার জনপ্রিয়। কিন্তু কিছু প্রাথমিক গবেষণায় বলা হয়েছে, এসব খাবারের উচ্চ লবণের সঙ্গে পাকস্থলীর ক্যানসারের সংযোগ থাকতে পারে।

* চারকুটেরি: সসেজ, ব্যাকন, হ্যাম ও স্যালামির মতো মাংস সংরক্ষণের প্রক্রিয়া নাইট্রাইটস গঠন করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এই কম্পাউন্ড কোলন ও অন্যান্য ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা ডায়েটে প্রক্রিয়াজাত মাংস সীমিত করার জন্য সুপারিশ করছে। স্মোকিং, সল্টিং অথবা কিউরিংয়ের মাধ্যমে সংরক্ষিত মাংস কম খান।

* অ্যালকোহলিক পানীয়: অ্যালকোহলের ক্ষেত্রে কোয়ালিটির চেয়ে কোয়ান্টিটি বড় ফ্যাক্টর। পরিমিত থেকে উচ্চ মাত্রার অ্যালকোহল পানের সঙ্গে ক্যানসারের বর্ধিত ঝুঁকির শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা এক সার্ভিংয়ের বেশি অ্যালকোহল পান করতে নিষেধ করছেন।

* লাল মাংস: যেকোনো ধরনের লাল মাংস (যেমন- গরুর মাংস, শূকরের মাংস, ভেড়ার মাংস) ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। প্রতি সপ্তাহে ১৮ আউন্সের বেশি লাল মাংস খাওয়ার অভ্যাস কোলরেক্টাল ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এ কারণে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ডায়েটের বেশিরভাগ প্রোটিন উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

* কোমল পানীয়: গবেষকরা এখনো চিনি ও ক্যানসারের মধ্যে সংযোগ নিয়ে তদন্ত করলেও বেশি চিনি খাওয়ার অভ্যাস নিশ্চিতভাবে ওজন বৃদ্ধি করতে পারে। একটি বিষয় খুব পরিষ্কার যে, অতিরিক্ত ওজন ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। উদাহরণস্বরূপ, আপনার শরীরে যত বেশি চর্বি থাকবে, আপনার ইস্ট্রোজেনের মাত্রা তত বেশি হবে এবং এটি স্তন ক্যানসার ও প্রজননাঙ্গে ক্যানসার বিকাশের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।

* মাইক্রোওয়েভ পপকর্ন: প্রায়ক্ষেত্রে মাইক্রোওয়েভ্যাবল পপকর্ন ব্যাগে লাইনার হিসেবে ননস্টিক কোটিং ব্যবহার করা হয়। ননস্টিক কোটিংয়ে পিএফওএ নামক কেমিক্যাল থাকে। প্রাণীর ওপর চালানো গবেষণায় পাওয়া যায়, এই কেমিক্যাল যকৃত, অণ্ডকোষ ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ঘরে বানানো পপকর্ন খেতে পারেন। যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে বিকল্প লাইনারের পপকর্ন খেতে পারেন।

* গরম পানীয়: গবেষণায় দেখা গেছে, ১৪৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি তাপমাত্রায় পানীয় পরিবেশন খাদ্যনালীর ক্যানসারের ঝুঁকি উচ্চ করে। গবেষকরা ধারণা করছেন যে উচ্চ তাপমাত্রা টিস্যু ড্যামেজ করতে পারে, যার ফলে এটিতে ক্যানসারযুক্ত লেশন (লেশন হচ্ছে অস্বাভাবিক টিস্যুর অংশ, যা বিনাইন অথবা ক্যানসারযুক্ত হতে পারে) বিকাশের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। অধিকাংশ বাণিজ্যিক পানীয় ১৪০-১৬০ ডিগ্রি ফারেনহাইট রেঞ্জে পরিবেশন করা হয়। তাই গরম পানীয় পানের পূর্বে এটিকে পর্যাপ্ত ঠান্ডা হতে দিন।

খাবারকে ভয় পাবেন না

গবেষণার তথ্য এটা বলছে না যে, মাঝেমাঝে এসব খাবার খাওয়া আপনার মৃত্যুর কারণ হবে। বরঞ্চ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিনিয়ত নিম্নমানের ডায়েটের অভ্যাস আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে। আপনি যদি নিয়মিত চর্বিহীন প্রোটিন, হোল গ্রেন, ফল ও শাকসবজি না খান এবং এর পরিবর্তে উচ্চ চর্বি, চিনি, লবণ ও প্রক্রিয়াজাত খাবার খান- তাহলে সুস্থ থাকতে আপনার খাদ্যতালিকা নতুন করে সাজান।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ