মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম

নিয়মিত খোলার ব্যবস্থা নিন

সম্পাদকীয়
প্রকাশের সময় : সোমবার, ৮ মে, ২০২৩

‘সবার জন্য শিক্ষা’—এ লক্ষ্যেই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা। শিক্ষার প্রথম ভিত্তি হলো প্রাথমিক শিক্ষা। কিন্তু আমাদের দেশে প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিক্ষকদের সরকারি করেছিলেন। শিক্ষা বিস্তার ও শিক্ষকদের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হয়েছে। প্রধান শিক্ষকদের মর্যাদা তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়েছে। সহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেডও এক ধাপ উন্নীত হয়েছে। কিন্তু তার পরও দেশের প্রাথমিক শিক্ষা অনেকটাই যেন অবহেলার শিকার।

গ্রামের স্কুলের লেখাপড়ার মান নিয়েও প্রশ্ন আছে। অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয়েই মানসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব আছে। উপযুক্ত ভবন নেই, আসবাব বা শিক্ষা উপকরণ নেই বললেই চলে। কালের কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত এক খবরে বলা হয়েছে, সুনামগঞ্জের হাওরের শাল্লা উপজেলার দুর্গম আটগাঁও, শাল্লা ও বাহাড়া ইউনিয়নের ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়মিত খোলা হয় না। সম্প্রতি প্রতিনিধিরা এসব দুর্গম এলাকার ১৫টি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখেছেন, বেশির ভাগ বিদ্যালয়ই বন্ধ। কিছু বিদ্যালয় খোলা থাকলেও প্রধান শিক্ষক নেই। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হারও কম। মাসের বেশির ভাগ সময়ই স্কুল বন্ধ থাকে। শিক্ষকরা সকাল ১১টার পর আসেন, আবার দুপুর ১টার মধ্যে চলে যান। শাল্লা উপজেলায় ১০৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে ৮১ জন নতুন শিক্ষক পদায়ন করা হলেও বড় রকমের আর্থিক লেনদেনের কারণে দুর্গম এলাকায় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কম। ফলে এসব এলাকায় শিক্ষকসংকট থেকেই যাচ্ছে।

শিক্ষার মানের উন্নতির প্রথম শর্ত ভালো শিক্ষক। শাল্লা উপজেলার একটি ইউনিয়নের ১৫টি বিদ্যালয়ের চিত্র আমাদের দেখিয়ে দিচ্ছে ওই এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষার চিত্র। অথচ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে সমমানের করে গড়ে তোলা গেলে এক অনির্ধারিত অথচ অনিবার্য প্রতিযোগিতা থেকে রক্ষা পেত আমাদের শিশু শিক্ষার্থীরা।

এমনিতেই হাওরাঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা বরাবর বহুমুখী সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বিদ্যালয়ে কমে যায়। ফলে দিন দিন নিম্নমুখী হচ্ছে এই অঞ্চলের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা। এ অবস্থায় আলোচিত ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান নিয়মিত করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে—এটিই প্রত্যাশা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ